করোনা আতঙ্কের মাঝে ২০২ জন রোহিঙ্গা নিয়ে নৌকা মালয়েশিয়ায়

দুই শ’রও বেশি মানুষ নিয়ে একটি নৌকা আটক করা হয়েছে মালয়েশিয়ার সাগরপাড়ে। আটককৃতদের রোহিঙ্গা মুসলিম দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। রোববার (৫ এপ্রিল) মালয়েশিয়ার সময় ভোর ৫ টায় এই ঘটনা ঘটে। মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে এই মুহূর্তে সবাই যখন করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন ঠিক তখনই মানবপাচারকারীরা সুযোগ নিচ্ছে নানা অবৈধ উপায়ে উদ্দেশ্য হাসিল করার।

মালয়শিয়ার অভিজাত পর্যটন এলাকা লঙ্কাউইর কাছে একটি রিসোর্টের এক নটিকাল মাইলের মধ্যে পাওয়া গেছে এই নৌকাটি। মালয়েশিয়ার একটি উপদ্বীপের পশ্চিম তীর এটি। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে মালয়েশিয়ার নৌবাহিনী। এই গ্রুপে ২০২ জন ছিলেন বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যার মধ্যে ১৫২ জন পুরুষ, ৪৫ জন নারী ও পাঁচটি শিশু।

স্থানীয় গণমাধ্যমে দেখা গেছে, এলাকাবাসী বলছে সেখানে ভোর পাঁচটার দিকে কাঠের একটি নৌকা দেখা যায়। তখন একজন গ্রামবাসী পুলিশকে ঘটনাটি জানায় ও পুলিশ তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহন করে। কোস্টগার্ড বলছে, এই পুরো গ্রুপটিকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে কারণ তারা অবৈধভাবে মালয়েশিয়ার সীমায় ঢুকেছে।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিক্ষোভ তবে সেখান থেকে তিনজন পাচারকারী পালিয়েছেন বলছে মালয়েশিয়ায় ঢুকতে চেষ্টা করা দলটি। তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হবে। রোহিঙ্গাবাহী এই নৌকাটি কোথা থেকে এসেছে এবিষয়ে কিছু এখনো কিছু জানায়নি মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ। ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গোপসাগর দিয়ে ১৩০ জন যাত্রী নিয়ে সাগর পার হওয়ার চেষ্টা করার সময় ডু্‌বে যায় একটি নৌকা। যেখানে মার যান ১৫ জন রোহিঙ্গা। মালয়েশিয়ায় এখন কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন চলছে।

মেহরুম (মিয়ানমার এথনিক রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন, মালয়েশিয়া) নামে রোহিঙ্গাদের একটি এনজিরও মুখপাত্র জাফর আহমেদ বলেন, দোকান-পাট, রেস্টুরেন্টে কাজ করেন অনেকে। পাম বাগান এবং কৃষি খামারে কাজ করেন। এছাড়া, যারা অনেকদিন ধরে রয়েছেন, তাদের কেউ কেউ দোকানপাট করেছেন। তবে অবৈধভাবে যারা রয়েছেন, তারা লুকিয়ে-চুরিয়ে অল্প পয়সায় শ্রম বেচে জীবনযাপন করছেন। ‘দেশে রোহিঙ্গারা ভাবে মালয়েশিয়া অনেক ভালো। সরকারের রহম (দয়া) আছে। আসার পর বুঝতে পারে পরিস্থিতি কি। স্বাধীনতা নাই।’

অবৈধভাবে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ায় যেতে গিয়ে গত বছরগুলোতে নৌকা ডুবে অথবা দালালদের নির্যাতনে অনেক রোহিঙ্গার প্রাণ গেছে। অনেক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার হিউম্যান রাইটস কমিশন এবং ব্যাংকক ভিত্তিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ফর্টিফাই রাইটস এক যৌথ প্রতিবেদনে বলেছে, মানব পাচারকারীরা রোহিঙ্গাদের সাথে যা করছে তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সামিল। ‘তারা হত্যা করছে, নির্যাতন করছে, জোর করে কাজ করাচ্ছে, ধর্ষণ করছে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন


Leave a Reply

Your email address will not be published.